মহামারির মধ্যে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ব্রিটিশ দম্পতি অ্যালেক্স এবং ডেভ রবিনসের ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে কন্যা শিশু লেক্সি রবিনস। চারদিকে যখন মৃত্যুর ছড়াছড়ি তখন তাকে পেয়ে ঘর আলোকিত হয়ে উঠে এই দম্পতির। সবকিছু সুন্দরভাবেই চলছিল। কিন্তু কয়েকমাস পরই বিপত্তি বেঁধেছে। বিরল এক রোগে আক্রান্ত শিশুটি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে তার শরীর পাথরের মতো শক্ত হয়ে যাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান ও ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যালেক্স এবং ডেভ জানিয়েছেন, জন্মের পর থেকে সবকিছু সুন্দরভাবেই চলছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা লক্ষ্য করেন, লেক্সির হাতের বুড়ো আঙুলটি নাড়ানো যাচ্ছে না। পায়ের আঙুলগুলোও একটু বড়। বেশ কয়েকদিন পর্যবেক্ষণের পরও দেখেন অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। তাই শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকের কাছে যান


প্রথমদিকে কেউই রোগ শনাক্ত করতে পারছিলেন না। এটা জানানো হয় যে, তাদের মেয়ে হাঁটাচলা করতে পারবে না। কিন্তু সুস্থ-সবল মেয়েকে দেখে তা বিশ্বাস করতে পারেননি এই দম্পতি। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান

সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তাদের মেয়ে বিরল ফাইব্রোডিসপ্লেসিয়া ওসিফিকানস প্রগ্রেসিভা (এফওপি) রোগে আক্রান্ত। এই রোগের ফলে কঙ্কালের কাঠামোর বাইরেও হাড় গজায়, শরীরে পেশিগুলো ধীরে ধীরে হাড়ে পরিণত হয় এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের আধিক্যও বাড়তে থাকে। একটা সময় শরীর কার্যত পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়।

চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির পায়ের পাতা থেকে আঙুল পর্যন্ত হাড়ের সন্ধিস্থলগুলো ফুলে রয়েছে এবং বুড়ো আঙুলে দুটি করে সন্ধিস্থল। কানের হাড় বাড়ছে। দাঁতের চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে না এবং ইঞ্জেকশনও দেওয়া যাবে না। বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ।

চিকিৎসক আরও জানান, তিনি তার ৩০ বছরের কর্মজীবনে এমন রোগী আর কখনো দেখেননি। বিরল এই রোগে আক্রান্তরা সাধারণত ২০ বছর বয়সেই শয্যাশায়ী হয়ে যান এবং ৪০ বছরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন।

ইত্তেফাক/টিএ